পৃষ্ঠাসমূহ

১৩ মে ২০১১

দান্তে

বিখ্যাত ইতালীয় কবি দান্তে ১২৬৫ সালের ১৩ মে ফ্লোরেন্সে জন্মগ্রহণ করেন। তার আসল নাম দুরান্তে দেইলি আলিঘিরেরি। তিনি ছিলেন মধ্যযুগের প্রধান ইতালীয় কবি। ডিভাইন কমেডি তার রচিত অমর মহাকাব্য। ভেনিশিয়া ভাষায় রচিত এ কাব্যে তিনি চার্চ এবং সমসাময়িক বিখ্যাত ঘটনা এবং ব্যক্তিবর্গের ব্যঙ্গাত্মক ঘটনা নিপুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। সব ইতালীয় ভাষার পিতৃপুরুষ হিসেবে স্বীকৃত তিনি।
পারিবারিকভাবে বিত্তশালী না হলেও দান্তেদের পরিবার ছিল সে সময় অভিজাত ও প্রভাবশালী।
দান্তের শিক্ষাদীক্ষা নিয়ে তেমন কিছু জানা যায় না। ধারণা করা হয়, বাড়িতেই তার পড়াশোনা শেষ হয়। সিসেরো, ওভিদ এবং ভার্জিলের কবিতায় তার প্রচণ্ড আগ্রহ ছিল। জানা যায়, দান্তে ৯ বছর বয়সেই বিয়েট্রিস পর্টিনারি নামে এক ফ্লোরেন্সীয় মেয়ের প্রেমে পড়েন। দান্তে কখনোই তার সম্পর্কে ভালোভাবে জানতেন না। তবে তার রচনায় এই রমণীর কথা বিভিন্নভাবে মূর্ত হয়ে উঠেছে। পরবর্তীকালে দান্তে রাজনীতিতে জড়িত হয়ে পড়েন এবং নির্বাসিত হন। ১৪২১ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

১২ মে ২০১১

ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল

আধুনিক নার্সিং সেবার অগ্রদূত, লেখিকা ও পরিসংখ্যানবিদ ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল ১৮২০ সালের ১২ মে ইতালির ফ্লোরেন্সে জন্মগ্রহণ করেন। ক্রিমিয়ার যুদ্ধে আহত সেনাদের সেবাদান করে তিনি নার্সিংকে এক স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে তুলে ধরেন। তাকে বলা হতো লেডি উইথ দ্য ল্যাম্প। লন্ডনের সেন্ট থমাস হাসপাতালে তিনি নার্সিংকে পেশা হিসেবে রূপ দেন ১৮৬০ সালে। এখন যারা এ পেশায় নতুন আসেন তারা ‘নাইটিঙ্গেল প্লেজ’ নামে একটি শপথ গ্রহণ করে তার প্রতি সম্মান জানান।
নাইটিঙ্গেল বিশ্বাস করতেন স্রষ্টা তাকে সেবিকা হওয়ার জন্য পাঠিয়েছেন। এ কারণে মা এবং বোনের তীব্র আপত্তি সত্ত্বেও এ পেশায় তিনি এসেছিলেন। তিনি শুধু একজন স্ত্রী কিংবা মা হিসেবে তার পরিচিতি সীমাবদ্ধ থাক—এটা মেনে নিতে পারেননি। পারিবারিক বাধা সত্ত্বেও কঠোর পরিশ্রম করে তিনি নার্সিংয়ে জ্ঞানার্জন করেন।
পরবর্তী সময়ে ফ্লোরেন্স ভারতের গ্রামীণ মানুষের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর এক পরিসংখ্যান-নির্ভর গবেষণা চালিয়েছিলেন, যা ভারতে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা বিধানে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ১৮৫৯ সালে তিনি রয়্যাল স্ট্যাটিসটিক্যাল সোসাইটির প্রথম সারির সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯১০ সালের ১৩ আগস্ট লন্ডনের পার্ক লেনে তিনি মারা যান।

১১ মে ২০১১

সালভাদর দালি

খ্যাতিমান স্প্যানিশ পরাবাস্তববাদী (Surrealist) চিত্রকর সালভাদর দালি ১৯০৪ সালের ১১ মে সেদেশের ফিগারেসে জন্মগ্রহণ করেন।
একজন নিখুঁত শিল্পী হিসেবে তিনি তার কর্মে যে বিষয়বস্তুর রূপদান করেন তা অদ্ভুত ও আবেদনময়ী। বলা হয়ে থাকে, তার শিল্পকর্মে নবজাগরণের প্রভাব পড়েছিল। ভাস্কর্য, চলচ্চিত্র এবং ফটোগ্রাফির মধ্যে তার বিশাল শিল্প প্রতিভার স্ফুরণ ঘটে। অতি উচ্চ মার্গের কল্পনাশক্তির অধিকারী ছিলেন তিনি। অনেক সময় শিল্পকর্মের চেয়ে খামখেয়ালি আচরণের জন্যও তিনি আলোচনার বিষয়বস্তু হয়েছিলেন।
দালির বাবা ছিলেন একজন আইনজীবী। তার মা ক্যান্সারে মারা গিয়েছিলেন। এ সময় দালির বয়স ছিল ১৬। মায়ের মৃত্যু তার জীবনে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব রেখে যায়।
১৯২২ সালে দালি মাদ্রিদে চলে আসেন এবং একাডেমিয়া ডি সান ফার্নান্দোতে পড়াশোনা করেন। কিউবিজম নিয়েও তিনি ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন।
ফ্যাকাল্টিতে তাকে পরীক্ষা নেয়ার যোগ্যতা কারও নেই—এই উক্তি করে তিনি একাডেমিয়া থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে দালির শিল্পকর্মে পাবলো পিকাসো এবং হুয়ান মিরোর প্রভাব পড়েছিল।
১৯৮৯ সালের ২৩ জানুয়ারি তিনি ফিগারেসে মৃত্যুবরণ করেন।

০৭ মে ২০১১

সঙ্গীতের প্রবাদপুরুষ মিয়া তানসেন

হিন্দুস্থানি উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের প্রবাদপুরুষ মিয়া তানসেন ১৫৮৯ সালের ৬ মে (প্রাপ্ত তথ্যমতে) মৃত্যুবরণ করেন। বলা যায়, এই উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের বৈচিত্রের স্রষ্টা তিনি। এক অসাধারণ কণ্ঠের অধিকারী তানসেন বহু গান সৃষ্টির পাশাপাশি বাদ্যযন্ত্র রাবারকে এ অঞ্চলে জনপ্রিয় করেছিলেন। আকবরের নবরত্ন সভার অন্যতম ছিলেন তিনি। তার পুরো নাম রামতনু পাণ্ডে। আকবর তাকে মিয়া উপাধিতে ভূষিত করেন।
তিনি হিন্দু ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন ১৫০৬ খ্রিস্টাব্দে। তার বাবা মুকুন্দ পাণ্ডে ছিলেন একজন কবি। পারস্য ও মধ্য এশিয়ার সঙ্গীতের কিছু উপকরণ যখন ভারতীয় উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে মিশ্রিত হচ্ছিল তখন তার জন্ম একটি যুগসন্ধিক্ষণের সাক্ষী হয়ে থাকে। মধ্য ভারতের সাতনা জেলার কাছে একটি গ্রামে তার জন্ম।
বৃন্দাবনের কিংবদন্তি সঙ্গীতজ্ঞ স্বামী হরিদাসের শিষ্য ছিলেন তিনি। বাবার মৃত্যুর পর তানসেন বাড়ি ফিরে যান এবং সেখানে বিখ্যাত মুসলিম সাধক মুহম্মদ গাউসের সংস্পর্শে আসেন। ধারণা করা হয়, গাউসের সংস্পর্শে এসে তিনি ইসলামে দীক্ষিত হয়েছিলেন। অন্তত তার সমাধিতে তা-ই প্রতীয়মান হয়।

০৬ মে ২০১১

ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন বোনাপার্ট

ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন বোনাপার্ট ১৮২১ সালের ৫ মে যুক্তরাজ্যশাসিত সেন্ট হেলেনা দ্বীপের লঙউডে নির্বাসিত অবস্থায় পরলোকগমন করেন। ফরাসি বিপ্লবের সময় তিনি ছিলেন একজন জেনারেল। ফরাসি প্রজাতন্ত্রের প্রথম কনসাল ছিলেন তিনি। ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ এই জেনারেল প্রথম নেপোলিয়ন নামে ১৮০৪-১৮১৫ সাল পর্যন্ত ফরাসি সম্রাট হিসেবে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তিনি ইতালিরও রাজা ছিলেন। তার নেতৃত্বে ফরাসি সেনাবাহিনী এক দশকের বেশি সময় ধরে সব ইউরোপীয় শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হয় এবং ইউরোপের অধিকাংশ অঞ্চল আয়ত্তে নিয়ে আসে। ১৮১২ সালে তার নেতৃত্বে ফরাসি বাহিনী রাশিয়ায় যে আগ্রাসন চালায় তা ইউরোপের রাজনীতিতে মহাসন্ধিক্ষণ হিসেবে বিবেচিত। রাশিয়ায় আক্রমণ এবং ১৮১৩ সালে লিপজিগে পরাজয়ের পর ষষ্ঠ কোয়ালিশন ফ্রান্সে আগ্রাসন চালায়। এর ফলে ১৮১৪ সালে নেপোলিয়ন পশ্চাত্পসারণ করতে বাধ্য হন। ১৮১৫ সালে তিনি ওয়াটার লু যুদ্ধে হেরে যান। এর ফলে জীবনের বাকি ৬ বছর তাকে আটলান্টিক মহাসাগরে সেন্ট হেলেনা দ্বীপে নির্বাসিত জীবন কাটাতে হয়। ১৭৬৯ সালে ১৫ আগস্ট ফ্রান্সের করসিকার এজাসিও শহরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার জীবনে তার মায়ের প্রভূত প্রভাব পড়েছিল। ১৭৮৫ সালে প্রশিক্ষণ শেষ করে বোনাপার্ট সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট পদে কমিশন পান। ১৭৮৯ সালের বিপ্লবের আগ পর্যন্ত নেপোলিয়ন ভ্যালেন্স এবং এক্সনে সেনা রক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন।

০২ মে ২০১১

গোয়েবলস

১৯৪৫ সালের ১ মে বার্লিনে সস্ত্রীক আত্মহত্যা করেন নািস নেতা ও হিটলারের প্রচারমন্ত্রী যোসেফ গোয়েবলস। এর আগে তারা নিজেদের ছয় সন্তানকে হত্যা করেন। গোয়েবলস ১৯৩৩-৪৫ সাল পর্যন্ত নািস জার্মানির প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রধান ছিলেন। বিদ্বেষপূর্ণ বক্তৃতা এবং ইহুদিবিরোধী তত্পরতার জন্য তিনি কুখ্যাত ছিলেন। জার্মানিতে ইহুদিদের বিরুদ্ধে যে ধারাবাহিক আক্রমণ সূচিত হয়েছিল তাতে তার হাত ছিল এবং এর ফলেই সেখানে ব্যাপক ইহুদি হত্যাযজ্ঞ (ঐড়ষড়পধঁংঃ) সংঘটিত হয়। ফ্রেঞ্চ অকুপেশন অব দ্য রূহর’র সময় তিনি নািস পার্টির সংস্পর্শে আসেন এবং ১৯২৪ সালে এর সদস্য হন। বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য তার মাশুল দিতে হয়েছিল তাকে। তিনি কিছু নাটক এবং উপন্যাস লিখলেও প্রকাশকরা তা ছাপায়নি।
১৯২১ সালে হাইডেলবার্গ ইউনিভার্সিটি থেকে তিনি পিএইচডি লাভ করেছিলেন। পরবর্তী সময়ে সাংবাদিক হিসেবেও কাজ করেন। এছাড়া ব্যাংকের করণিক পদেও দায়িত্ব পালন করেন। ১৮৯৭ সালের ২৯ অক্টোবর জার্মানির প্রুশিয়ায় তার জন্ম হয়। ১৯৪৫ সালের শুরুতে সোভিয়েত ও মিত্রবাহিনীর সৈন্যরা যখন রাইন নদী অতিক্রম করছিল তখনই তিনি বুঝতে পারেন জার্মানীর পরাজয় অনিবার্য। ৩০ এপ্রিল হিটলারের আত্মহত্যার পর গোয়েবলস মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন এবং ১ মে তিনি তার পদাঙ্ক অনুসরণ করেন।